দু'জন নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে পৃথক দুই মামলায় ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংকে ১০ বছর করে মোট ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।
সোমবার হরিয়ানার রোহতক কারাগারে গিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) বিশেষ আদালতের বিচারক জগদ্বীপ সিং ওই রায় ঘোষণা করেন।
প্রাথমিকভাবে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রাম রহিম সিংয়ের কারাদণ্ড হয়েছে ১০ বছরের। তবে ২০০২ সালের ওই জোড়া ধর্ষণের দায়ে ধর্ষক ধর্মগুরুর আলাদাভাবে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালতের বিচারক। এতে করে রাম রহিমকে ১০ বছর নয়, সাজা ভোগ করতে হবে মোট ২০ বছর।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এসকে জর্জ নরওয়ানা জানান, দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ধর্মগুরুকে আলাদাভাবে ১০ বছর করে মোট ২০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
এছাড়া বিচারক জগদ্বীপ সিং রাম রহিমকে প্রত্যেক মামলায় আলাদাভাবে ১৫ লাখ রুপি করে জরিমানা করেন। এতে করে রাম রহিমের অর্থদণ্ডের পরিমাণ হয়েছে ৩০ লাখ রুপি। এই ৩০ লাখ রুপির মধ্যে আলাদাভাবে ১৪ লাখ করে মোট ২৮ লাখ রুপি প্রদান করা হবে ধর্ষিত দুই নারীকে।
রামদেব বার্তা সংস্থা এএনআই'কে বলেন, এটা একটা উদাহরণ হয়ে থাকল যে মানুষ যতোই ক্ষমতাধর হোক, কোনোভাবেই আদালত এবং আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।
তিনি আরও বলেন, ধর্মের নামে অবৈধ কার্যকলাপ করা একেবারেই অনুচিত। বিচার দেরিতে হতে পারে, তা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। এখন আমাদের বিচার ব্যবস্থা অনেক শক্তিশালী হয়েছে। সে কারণে অপরাধ করে কারও পার পাওয়ার কোনো উপায় নেই।
আদালত সেটাই করে দেখিয়েছে। এই ঘটনা থেকে ক্ষমতাবান লোকদের শিক্ষা নেয়া উচিত। যদি আপনি অপরাধী হয়ে থাকেন; শাস্তি অাপনাকে পেতেই হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত শুক্রবার ১৫ বছর আগের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন ৫০ বছর বয়সী রাম রহিম সিং। গুরমিত রাম রহিমের সর্বোচ্চ সাজার আবেদন করেছিল সিবিআই। অন্যদিকে, রাম রহিমের আইনজীবী লঘু শাস্তির আবেদন করেন।
অাইনজীবীর যুক্তি, যেহেতু বহু সামাজিক কাজে জড়িয়ে আছে রাম রহিমের নাম; সেকারণে লঘু শাস্তি দেয়া উচিত।
বিচারকের সামনে ক্ষমাও চান রাম রহিম। রাম রহিম হাত জোড় করে বলেন, ‘আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ কথাগুলো বলার সময় তিনি কেঁদেও ফেলেন।
শুক্রবার রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তার শিষ্যরা তাণ্ডব শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ৩৮ জন নিহত এবং ২৫০ জন আহত হয়। ৩২ জন পঞ্চকুলায় এবং সিরসায় ৬ জন নিহত হয়।
ঝামেলা এড়াতে রোহতকের কারাগারে বিচারক জগদীপ সিংকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই গ্রন্থাগারের মধ্যে আদালত বসে এবং সাজা ঘোষণা করেন বিচারক।
সূত্র : দ্য হিন্দু, এনডিটিভি
Post a Comment
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.